স্বদেশ ডেস্ক: রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কারণে এ পর্যন্ত ৮ হাজার ১ একরেরও বেশি বন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর্থিক মূল্যে এ ক্ষতির পরিমাণ ২৪২০ কোটি টাকারও অধিক। জাতীয় সংসদের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এক বৈঠকে বন অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এ তথ্য উপস্থাপন করা হয়। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এমপি সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, রোহিঙ্গাদের কারণে দেশের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি পূরণ করা সম্ভব নয়। তাদের আশ্রয় দিয়ে বন গেছে, পশুপাখির আবাসসহ ধ্বংস হয়েছে। ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বন্য হাতি। প্রায় ১০ হাজার গভীর নলকূপ থেকে প্রতিদিন পানি তোলায় ক্রমে নিচে নামছে স্তর আর দেখা দিয়েছে পানি সংকট। এটি চলতে থাকলে আগামিতে উখিয়া-টেকনাফ মরুভূমিতে রূপ নিবে। তাই রোহিঙ্গাদের জন্য আর ইঞ্চিও বনভূমি দেওয়া হবে না। একাদশ জাতীয় সংসদের ‘পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি’র ৮ম বৈঠক শেষে শুক্রবার সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের শহীদ জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির এ বৈঠকে সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী আরও পাহাড় কাটা নিয়ে বলেন, যারা পাহাড় কাটবে তাদের রেহাই নেই। এনজিওরা পাহাড় কাটায় জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নির্দিষ্ট স্থানে ৬৩টি হাতি চলাচলের পথ রয়েছে। এসব হাতির পথের চারিদিকে গড়ে উঠেছে রোহিঙ্গা বসতি। তাই হাতিগুলো বর্তমানে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এসব হাতি সুরক্ষার। বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের জন্য করিডোর করার পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ৮ম সংসদীয় কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কি পরিমাণ পরিবেশের ওপর প্রভাব পড়েছে এবং ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপণের। এ জন্য কমিটি গঠিত হয়েছে। আগামী নভেম্বর মাসে তার প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে কমিটি। কক্সবাজার শহরে শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ে সম্প্রতি শতাধিক মাদার ট্রি গাছ কাটার ব্যাপারে সাবের হোসেন চৌধুরী হোসেন বলেন, অনুমতি না নিয়ে নিজস্ব কমাউন্ডে গাছ কাটায় এখন কর্তনকৃত এসব গাছ বিক্রি ও বাইরে কোথাও নিয়ে যেতে পারবে না আরআরআরসি। এ ব্যাপারে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, সরকার পরিবেশ সুরক্ষার ওপর খুবই গুরুত্ব দিচ্ছে। পাহাড় কাটা, বন ধ্বংস করাসহ নানাভাবে পরিবেশ ধ্বংস করা হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতের পরিবেশ সুরক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। পরিবেশ সুরক্ষা হলেই মানষসহ সমস্ত প্রাণিকুলের সুরক্ষা হবে। সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৮ম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, স্থায়ী কমিটির সদস্য জাফর আলম এমপি, আনোয়ার হোসেন এমপি, মো. মোজাম্মেল হোসেন, নাজিম উদ্দিন এমপি, রেজাউল করিম বাবলু এমপি, বেগম খোদেজা নাসরিন আক্তার হোসেন এমপি, জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন প্রমুখ।